প্রতিনিধি 29 October 2025 , 10:04:51 প্রিন্ট সংস্করণ

লক্ষ্য ছিল নাগালের মধ্যেই তবে সেই ১৫০ রানের লক্ষ্যও বড় হয়ে গেল লিটন দাসদের জন্য। ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ২০ ওভার শেষে ১৩৫ রানে থেমেছে লিটন দাসের দল। শেষ ওভারে ম্যাচ জিতে সিরিজে সমতা আনতে বাংলাদেশের ২১ রান দরকার ছিল। কিন্তু স্পিনার আকিল হোসেনের সঠিক লেন্থ আর ভ্যারিয়েশনে একটি বাউন্ডারিও তুলতে পারেননি বাংলাদেশের শেষ জুটি। উল্টো রিশাদ হোসেন ও নাসুম আহমেদ আউট হয়ে ফেরেন এবং তাতেই শেষ হয়ে যায় লিটন দাসদের লড়াই।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের দেয়া ১৪৯ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৩৫ রানে থেমেছে বাংলাদেশ। ফলে সিরিজে ২–০ ব্যবধানে পিছিয়ে এখন আনুষ্ঠানিক শেষ ম্যাচের অপেক্ষায় টাইগাররা। এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান দেড় শ ছুঁতে পারেনি। ২০তম ওভারের শেষ বল ব্যাটেই নিতে পারেননি আকিল, তবু নন স্ট্রাইক থেকে দৌড় দিয়েছিলেন রোস্টন চেজ। আকিল হোঁচট খেয়ে পপিং ক্রিজে পড়ে গেছেন। চেজ ফিরে আসতে চেয়েও হয়েছেন রানআউট।
রান তাড়ায় বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছে ধীরে। প্রথম ওভারে ২ আর দ্বিতীয় ওভারে ৫ রান নিয়েছেন ওপেনাররা। এর মধ্যে হোল্ডারের করা দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে ক্যাচ তুলেছিলেন সাইফ হাসান। তবে পয়েন্ট থেকে পেছনে দৌড়ে ঠিকঠাক বলের নিচে যেতে পারেননি ব্রেন্ডন কিং। ক্যাচ হতে হতে দুই রান পেয়েছেন সাইফ।
শেষ পর্যন্ত ক্যাচ তুলেই আউট হলেন সাইফ (১১ বলে ৫ রান)। হোল্ডারের বল তুলে মারতে গিয়ে এক্সট্রা কাভারে ক্যাচ দিলেন ব্রেন্ডন কিংয়ের হাতে। চতুর্থ ওভারের পঞ্চম বলে প্রথম উইকেট হারাল বাংলাদেশ। রানের জন্য গ্যাপ খুঁজে বের করতে পারছিলেন না সাইফ। চাচ্ছিলেন বড় শট খেলতে, বৃত্তের ভেতরে থাকা ফিল্ডারদের মাথাও ওপর দিয়ে বল পাঠাতে। কিন্তু হচ্ছিল না।
এবার লিটনের ক্যাচ ছাড়লেন রাদারফোর্ড। প্রথম ছয় ওভারের মধ্যেই দুটি ক্যাচ ছাড়ল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেফার্ডের ভালো লেন্থের বল, লিটন লাইন ছেড়ে খেলতে গিয়ে টপ-এজে লাগান। বল অনেকক্ষণ বাতাসে ভেসে ছিল। মিড-উইকেটের কাছে দাঁড়ানো রাদারফোর্ডের হাতে সময়ও ছিল যথেষ্ট। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে পারলেন না।

জীবন পেয়ে সেটা কাজে লাগাতে পারলেন না বাংলাদেশ অধিনায়ক। আকিল হোসেনের বলে তাঁর স্টাম্প উড়ে গেল! অফ স্টাম্পে প্রায় ৯০ কিলোমিটার গতির বল, লেন্থে একেবারে নিখুঁত। লিটন ব্যাকফুটে গিয়েছিলেন, অথচ বলটা খেলার কথা ছিল সামনের পায়ে। ব্যাটে বল লাগল না, সরাসরি আঘাত হানল অফ স্টাম্পে।
নতুন ব্যাটসম্যান জাকের আলী। এক প্রান্ত আগলে রেখেছেন তানজিদ হাসান। অফ স্টাম্পের ওপর হালকা ফ্লাইটেড বল, হৃদয় সুইপ করলেন ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগের দিকে। সেখানে ছুটে গিয়ে ডাইভ দিলেন সিলস, কিন্তু বল আঙুলের নাগালে পেলেও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলেন না। মনে হলো, বলটা ঠিকঠাক দেখেননি।।
১৩তম ওভারের প্রথম বলে আউট তাওহিদ হৃদয়। রোমারিও শেফার্ডের বলে দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়েছেন সিলস। কিছুক্ষণ আগে এই সিলসই হৃদয়ের ক্যাচ মিস করেছিলেন। ৮৫ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
এর আগে ক্যাচ দিয়ে বেঁচেছিলেন সাইফ, লিটন ও হৃদয়। অবশ্য তিনজনের কেউই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ইনিংস বড় করতে পারেননি। এবার ক্যাচ দিয়ে বাঁচলেন তানজিদ হাসান। আকিল হোসেনের বলে মিডউইকেট বাউন্ডারিতে সহজ ক্যাচ ছেড়েছেন অ্যাথানেজ। এটি ওয়েস্ট ইন্ডিজের চতুর্থ ক্যাচ মিস।
ইনিংসের ১৫তম ওভারে ১০০ রানে পৌঁছেছে বাংলাদেশ। তার আগে ব্যক্তিগত ফিফটি পূর্ণ করেছেন তানজিদ। শেফার্ডকে কাভার বাউন্ডারি দিয়ে চার মেরে ৩৮ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন তিনি। এটি তার টি–টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের নবম ফিফটি। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভার খেলেও শেষ রক্ষা হয়নি। ১৪ রানে হারে বাংলাদেশ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১৪৯/৯ (হোপ ৫৫, অ্যাথানেজ ৫২; মোস্তাফিজ ৩/২১, রিশাদ ২/২০, নাসুম ২/৩৫)
বাংলাদেশ: ১৩৫/৮ (তানজিদ ৬১, জাকের ১৭; আকিল ২/১৭, হোল্ডার ২/২৩)
ফলাফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ জয়ী ১৪ রানে; সিরিজে ২–০ এগিয়ে।
বাংলাদেশ একাদশ: লিটন দাস (অধিনায়ক ও উইকেটকিপার), তানজিদ হাসান, সাইফ হাসান, জাকের আলী, শামীম হোসেন, তাওহিদ হৃদয়, তাসকিন আহমেদ, রিশাদ হোসেন, তানজিম হাসান, নাসুম আহমেদ ও মোস্তাফিজুর রহমান।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ একাদশ: ব্রেন্ডন কিং, অ্যালিক অ্যাথানেজ, শাই হোপ (অধিনায়ক ও উইকেটকিপার), রোস্টন চেজ, শারফেন রাদারফোর্ড, রোভমান পাওয়েল, জেসন হোল্ডার, রোমারিও শেফার্ড, আকিল হোসেন, খারি পিয়েরে ও জেইডেন সিলস।