প্রতিনিধি 5 October 2025 , 10:50:49 প্রিন্ট সংস্করণ

দুবায়ের শারজাহ মাঠেও ব্যাট হাতে জ্বলে উঠতে পারল না আফগানিস্তান। তবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে হোয়াইট ওয়াশে বাংলাদেশের দরকার ১৪৪ রান। অপরদিকে, বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে একের পর এক উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় রশিদ খানের দল। ফলে বড় সংগ্রহ গড়ার আশায় ব্যর্থ হয় তারা। ৩ ম্যাচ সিরিজের শেষ টি-২০তে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৪৩ রান করে স্বাগতিকরা। শুরুতে গতি পেলেও আফগানদের হোয়াইটওয়াশ করতে বাংলাদেশকে জিততে হবে।
শুরুতে আফগানিস্তানকে জুটি গড়তে দেয়নি বাংলাদেশ। বড় ইনিংস খেলার আভাস দিয়েছেন শুধু সেদিকউল্লাহ আতাল। তবে তাকেও বেশি দূর এগোতে দিলেন না সাইফউদ্দিন। তার শর্ট বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ দিলেন তানজিদ হাসানের হাতে।
ম্যাচের প্রথম ওভারে বোলিংয়ে এসেছেন শরীফুল ইসলাম। দ্বিতীয় টি–টোয়েন্টিতে ৪ ওভারে মাত্র ১৩ রান দিয়ে ১ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হওয়া শরীফুল ১ ওভারেই দিলেন ১১ রান। আফগান ব্যাটসম্যানদের এ ম্যাচে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মনে হয়।
দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসেছিলেন নাসুম আহমেদ। তাঁর ওভারে ইব্রাহিম জাদরান সিঙ্গেল নেওয়ার পর রহমানউল্লাহ গুরবাজ মেরেছেন দুটি চার। তবে শরীফুল আবার বোলিংয়ে এসেই বাংলাদেশকে ‘ব্রেকথ্রু’ এনে দিলেন। তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে তুলে মারতে গিয়ে মিড অনে নুরুল হাসানের হাতে ধরা পড়লেন জাদরান (৬ বলে ৭ রান)।
আফগানিস্তানের দুই ওপেনারকে দ্রুতই বিদায় করল বাংলাদেশ। জাদরানের পর আউট হলেন গুরবাজ (৯ বলে ১২ রান)। নাসুমের ওভারের প্রথম বলে কাট করেছিলেন গুরবাজ। বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়েছেন শামীম হোসেন। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ডেলিভারিটা হালকা সুইং করলেও হয়েছিল ফুল টস। সেটিই সামলাতে ব্যর্থ অনভিজ্ঞ ওয়াফিউল্লাহ তারাখিল। পাওয়ারপ্লের শেষ বলে তিনি বোল্ড হলেন (১৩ বলে ১১ রান)। পাওয়ারপ্লের প্রথম ২ ওভারে ২০ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিল বাংলাদেশ। পরের ৪ ওভারে বোলাররা দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ১৯ রান নিয়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট।
নিজের প্রথম ওভারে এলোমেলো বোলিং করলেন রিশাদ হোসেন দিলেন ১৬ রান। এর মধ্যে ওয়াইডেই এল ৬ রান। নিজের প্রথম ওভারে ১৬ রান দিলেও দ্বিতীয় ওভারে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ালেন রিশাদ হোসেন। ফেরালেন আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে। বলটা একটু দূরে করেছিলেন রিশাদ, টার্নও পেয়েছেন। ওমরজাই ছক্কা মারার ঝুঁকি নিয়েছিলেন। কিন্তু বল ব্যালের কিনারায় লেগে গেল নুরুল হাসানের হাতে (৬ বলে ৩ রান)।

নবী আউট হওয়ার পর ব্যাটিংয়ে নেমেছেন রশিদ খান। আফগান অধিনায়ক নিজের মুখোমুখি হওয়া দ্বিতীয় বলেই নাসুমকে ছক্কা মেরেছেন। মোহাম্মদ নবীও টিকতে পারলেন না। নাসুম আহমেদ বোলিংয়ে ফিরে নবীকে করলেন বোল্ড (৪ বলে ১ রান)। তখন ৬ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে আফগানিস্তান।
পরের বলেই আবদুল্লাহ আহমেদজাইকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জাগিয়েছেন তানজিম। কিন্তু দশে নামা মুজিব উর রেহমান সেই বলটা ঠেকিয়ে দেয়ায় হ্যাটট্রিক হলো না। নাসুমকে ছক্কা মারার পর রিশাদকে ৪ মেরেছিলেন রশিদ খান। এরপর তানজিম হাসানকে ছক্কা মারতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আফগান অধিনায়ক ফাইন লেগে ধরা পড়লেন নাসুমের হাতে। তবে বোলিংয়ে ফিরেছেন শরীফুল ইসলাম। তার ইয়র্কারে ৪ মেরে আফগানদের সংগ্রহ ১০০-এর ওপারে নিয়ে গেছেন মুজিব।
মাঝের দুই ওভার ভালো করলেও প্রথম আর শেষটা ভালো হলো না রিশাদের। তার শেষ ওভারে এল ১৩ রান। দারবিশ রাসুলি একটি করে চার ও ছক্কা মারলেন। নিজের তৃতীয় ওভার করতে এসে রাসুলিকে আউট করে এই জুটি ভাঙলেন সাইফউদ্দিন। ধুঁকতে থাকা আফগানদের টেনে তোলার চেষ্টায় কিছুটা সফল হয়েছেন দারবিশ রাসুলি ও মুজিব উর রেহমান। দুজন মিলে নবম উইকেটে গড়েছেন ৩৪ রানের জুটি, যা ইনিংসে সর্বোচ্চ। এর মাধ্যমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৪৩ রান করে স্বাগতিকরা।
এর আগে, আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি–টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচের মতো শেষ ম্যাচেও পরে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে বাংলাদেশ। টসে জিতে তারা এ সিদ্ধান্ত নেয় অধিনায়ক জাকের আলী। তবে আফগানিস্তান অধিনায়ক রশিদ খান জানিয়েছেন, টসে জিতলে তিনি আগে ব্যাটিংই করতেন।
আফগানিস্তান একাদশেও পরিবর্তন: এ ম্যাচে বাদ পড়েছেন বাঁহাতি স্পিনার নুর আহমেদ। তার পরিবর্তে অভিষেক হচ্ছে বাঁহাতি পেসার বশির আহমেদের। আফগানিস্তানের একাদশ: সেদিকউল্লাহ আতাল, ইব্রাহিম জাদরান, রহমানউল্লাহ গুরবাজ, দারবিশ রাসুলি, ওয়াফিউল্লাহ তারাখিল, আজমতউল্লাহ ওমরজাই, মোহাম্মদ নবী, রশিদ খান, আবদুল্লাহ আহমেদজাই, মুজিব উর রেহমান, বশির আহমেদ।
বিশ্রামে মোস্তাফিজ: বাংলাদেশ এরই মধ্যে সিরিজ জিতে যাওয়ায় নিয়ম রক্ষার ম্যাচে মোস্তাফিজুর রহমানকে বিশ্রামে রাখা হয়েছে। একাদশে পরিবর্তন এই একটিই। মোস্তাফিজের জায়গা নিয়েছেন আরেক পেসার তানজিম হাসান। বাংলাদেশের একাদশ: তানজিদ হাসান, পারভেজ হোসেন, সাইফ হাসান, জাকের আলী (অধিনায়ক), নুরুল হাসান, শামীম হোসেন, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, রিশাদ হোসেন, নাসুম আহমেদ, তানজিম হাসান ও শরীফুল ইসলাম।