প্রতিনিধি 19 September 2025 , 12:44:13 প্রিন্ট সংস্করণ

বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে বিদেশি ঋণ। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুন—এই তিন মাসে প্রায় ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ বেড়ে জুন শেষে বৈদেশিক ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১১২ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার। এর প্রায় সবটাই এসেছে সরকারি খাতে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত মার্চ শেষে বিদেশি ঋণের অঙ্ক ছিল ১০৪ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ মাত্র তিন মাসে ঋণ বেড়েছে ৭ দশমিক শূন্য ২ বিলিয়ন ডলার। আর গত বছরের ডিসেম্বরে ঋণ ছিল ১০৩ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন ডলার। ফলে ছয় মাসে ঋণ বেড়েছে ৮ দশমিক শূন্য ৪ বিলিয়ন ডলার।
সরকারি খাতেই বড় উল্লম্ফন
জুন শেষে সরকার ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিদেশি ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৯২ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলার। মার্চে এই অঙ্ক ছিল ৮৪ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ তিন মাসে সরকারি খাতে ঋণ বেড়েছে প্রায় ৭ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার।
অন্যদিকে বেসরকারি খাতে ঋণ কিছুটা কমেছে। জুন শেষে বেসরকারি খাতের ঋণ দাঁড়িয়েছে ১৯ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার, যা তিন মাস আগের তুলনায় ১১ কোটি ডলার কম।

কেন ঋণ বাড়ছে?
দীর্ঘদিন ধরে চলা ডলার সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), জাইকা, এআইআইবি–সহ বিভিন্ন দাতা সংস্থা থেকে ঋণ নেওয়া হয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর রিজার্ভ পতন ঠেকাতে সক্ষম হয়েছে এবং ডলারের বিনিময় হারেও এসেছে স্থিতিশীলতা। প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি ও বিদেশি ঋণ প্রাপ্তি এ স্থিতিশীলতায় বড় ভূমিকা রেখেছে।
২০০৬ সালে (চারদলীয় জোট সরকারের বিদায় সময়ে) বৈদেশিক ঋণ ছিল ১৯ বিলিয়ন ডলারের কিছু কম। ২০০৮ সালে (তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শেষে) তা বেড়ে দাঁড়ায় ২১ দশমিক ১৯ বিলিয়ন ডলারে। ২০২৪ সালের শেষে (আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসন শেষে) ঋণের অঙ্ক দাঁড়ায় ১০৩ বিলিয়ন ডলার। আর ২০২৫ সালের জুন শেষে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১১২ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ঋণ এখনো নিয়ন্ত্রণযোগ্য অবস্থায় থাকলেও এর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত না করা গেলে ভবিষ্যতে পরিশোধের চাপ বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।