প্রতিনিধি 26 October 2025 , 11:44:48 প্রিন্ট সংস্করণ

২২ দিনের ইলিশ প্রজনন মৌসুমের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর চাঁদপুরের মাছঘাটগুলো আবারও সরগরম হয়ে উঠেছে। শনিবার (২৫ অক্টোবর) রাত থেকেই নদীতে জেলেরা ইলিশ ধরতে নেমে বাজারে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরিয়েছে।
রোববার (২৬ অক্টোবর) চাঁদপুরের বড় স্টেশন মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে দেখা গেছে, ভোর থেকেই ইলিশ বিক্রেতা ও ক্রেতাদের উপস্থিতিতে হাটজীবন সচল। যদিও বড় আকারের ইলিশ খুব বেশি পাওয়া যায়নি, তবুও ছোট ও মাঝারি সাইজের ইলিশে বাজার সয়লাব। পদ্মা নদীর ইলিশ মেঘনার তুলনায় বেশি সুস্বাদু হিসেবে পরিচিত, তাই জেলেরা নদীতে বেশি সময় কাটাচ্ছেন।
বাজারে ১ কেজি ওজনের পদ্মা-মেঘনার ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২২০০ থেকে ২৩০০ টাকায়, যা মণ হিসেবে ৯০ হাজার টাকার মতো। ছোট সাইজের ইলিশ (প্রতি হালি ২০০ গ্রাম) বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৭০০ টাকা এবং ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম বা এক কেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২২০০ থেকে ২৫০০ টাকায়। বড় ইলিশের দাম ওজন অনুযায়ী আরও বাড়ে।
ইলিশ বিক্রেতা আমিরুল ইসলাম মালিতা জানান, “বড় ইলিশ খুব কম পাওয়া যাচ্ছে। তাই ছোট ও মাঝারি ইলিশের উপর ক্রেতাদের চাহিদা বেশি। এতে জেলেদের তেল খরচও পূরণ করা কঠিন হচ্ছে।”

জেলে মসিয়ার বলেন, “মেঘনা নদীর ইলিশ ছোট হওয়ায় পদ্মায় বেশি সময় কাটিয়েছি। তবুও বড় ইলিশ পাওয়া যায়নি। মাঝারি আকারের ১২টা ইলিশ পেয়েছি, যা দিয়ে সব খরচ মেটানো কঠিন।”
আড়তদার আজাদ মনে করেন, “ইলিশের দাম কমাতে নদী সংরক্ষণ জরুরি। নদীতে যত্রতত্র ময়লা ফেলা বন্ধ করতে হবে এবং খনন কাজ করতে হবে। এতে সাগর থেকে আরও বেশি ইলিশ আসবে।”
অনলাইনে ইলিশ বিক্রেতা সোহানুর রহমান বলেন, “নিষেধাজ্ঞার সময় অনেক অর্ডার দিতে পারিনি। এখন আশা করছি সব অর্ডার ডেলিভারি দিতে পারব। তবে দাম আবার ওঠানামা শুরু হয়েছে।”
চাঁদপুর মৎস্য সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক শবে বরাত সরকার বলেন, “প্রাকৃতিক ইলিশ আবহাওয়ার ওপর নির্ভর করে ধরা পড়ে। ভালো সিজনে দাম কমতে পারে। নিষেধাজ্ঞার পরই বাজারে ইলিশ এসেছে। কিছুদিনের মধ্যেই দাম প্রতি কেজি ২০০-৩০০ টাকা কমে আসবে।”
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ জানান, “নিষেধাজ্ঞার সময় মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান সফল হয়েছে। জেলেদের জন্য খাদ্য সহায়তা ও সচেতনতা বৃদ্ধি কার্যক্রম চালানো হয়েছে। আশা করছি এবার নদীতে বড় ইলিশ ধরা পড়বে। বাজারে দাম ক্রেতাদের নাগালে রাখতে মনিটরিং অব্যাহত থাকবে।