প্রতিনিধি 2 October 2025 , 6:43:13 প্রিন্ট সংস্করণ

৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে তৈরি হচ্ছে জুলাই জাতীয় সনদ। এর খসড়া চূড়ান্ত হলেও বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে এখনো ঐকমত্য হয়নি। এ কারণে আটকে আছে জুলাই সনদ। তাই জুলাই জাতীয় সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে ৫ অক্টোবর আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। আর ১০ অক্টোবরের মধ্যে বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে সুপারিশ চূড়ান্ত করে সরকারকে দিতে চায় কমিশন। লক্ষ্য ১৫ অক্টোবরের মধ্যে সব দলের স্বাক্ষরের মাধ্যমে সনদের পূর্ণাঙ্গ রূপ দেয়া।
অপরদিকে, জুলাই সনদের সংবিধান-সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতভিন্নতা কাটেনি। বিএনপি চায় প্রস্তাবগুলোর বাস্তবায়ন হবে জাতীয় নির্বাচনের পর, সংসদের মাধ্যমে। এ ছাড়া জামায়াতে ইসলামী আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগেই প্রস্তাবগুলোর বাস্তবায়ন এবং এর ভিত্তিতে নির্বাচন চায়। ফলে কমিশনের লক্ষ্য কতটা পূরণ হবে, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। জানা গেছে, বাস্তবায়নের উপায় ঠিক করতে ১১ সেপ্টেম্বর থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। ৩ দিন আলোচনা হলেও এখনো ঐকমত্য হয়নি। আপাতত আলোচনা মুলতবি রয়েছে।

ঐকমত্য কমিশন সূত্র জানায়, ৫ অক্টোবর আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসবে কমিশন। কমিশনের পরিকল্পনা হলো, ওই দিনই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শেষ করা। এরপর দলগুলোর সঙ্গে আর আলোচনা করা হবে না। সংবিধান-সম্পর্কিত প্রস্তাব বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে মোটাদাগে ৬টি সুপারিশ পেয়েছিল কমিশন।
সেগুলো হলো পূর্ণাঙ্গ সনদ বা তার কিছু অংশ নিয়ে গণভোট, বিশেষ সাংবিধানিক আদেশে বাস্তবায়ন, গণপরিষদ গঠনের মাধ্যমে বাস্তবায়ন, ত্রয়োদশ সংসদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন, সংসদকে সংবিধান সংস্কার সভা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে সনদের বিষয়গুলো সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা এবং সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে অনুমোদন। এ দিকে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের কাছে এই মর্মে মতামত চাওয়া যে অন্তর্বর্তী সরকার এই সনদ বাস্তবায়ন করতে পারবে কি না।
অন্যদিকে বিশেষজ্ঞরা মতামত দিয়েছিলেন, জুলাই সনদ নিয়ে সংবিধান আদেশ জারি করা যেতে পারে। এটি অবিলম্বে কার্যকর হবে। আর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন সংবিধান আদেশ নিয়ে গণভোট করা যেতে পারে। এ ছাড়া বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সংস্কার প্রস্তাবগুলোর বাস্তবায়ন টেকসই করতে হলে গণভোট বা গণপরিষদ সবচেয়ে ভালো বিকল্প।
কমিশন সূত্র জানায়, তারা সরকারকে বাস্তবায়নের একাধিক বিকল্প পদ্ধতি সুপারিশ করবে। এখন যে কয়টি পদ্ধতি আলোচনায় আছে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলে বিকল্প পদ্ধতির সংখ্যা কমিয়ে আনতে চায়। যদি দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য না হয়, তাহলে ৫ অক্টোবর দলগুলোর মতামত শোনার পর কমিশন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে বাস্তবায়নের সুপারিশ চূড়ান্ত করবে। ৮-৯ অক্টোবর বাস্তবায়নের সুপারিশ সরকারের কাছে জমা দিতে চায়। ১৫ অক্টোবর ঐকমত্য কমিশনের বর্ধিত মেয়াদ শেষ হবে। এর মধ্যেই কমিশন চূড়ান্ত করতে চায় জুলাই জাতীয় সনদ।