নিজস্ব প্রতিবেদক 7 September 2025 , 4:34:17 প্রিন্ট সংস্করণ
কয়েক বছর ধরেই নানা সংকট চলছে দেশের আর্থিক খাতে। উচ্চ খেলাপি ঋণের চাপে অন্তত ১ ডজন ব্যাংক তাদের গ্রাহকদের চাহিদামতো আমানতের অর্থও পরিশোধ করতে পারছে না। এ আস্থাহীনতার কারণে অনেক ব্যাংকের আমানত না বেড়ে উল্টো কমছে। তবে এ পরিস্থতির মধ্যেও ভালো করছে ব্যাংকের উপশাখাগুলো (সাব-ব্রাঞ্চ)। চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে দেশের সামগ্রিক ব্যাংক খাতে আমানতের প্রবৃদ্ধি ছিল ৩ দশমিক ৮ শতাংশ। কিন্তু একই সময়ে উপশাখার মাধ্যমে সংগৃহীত আমানত বেড়েছে ১২ দশমিক ৩ শতাংশ হারে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক তথা এপ্রিল-জুন সময়ে মূলধারার ব্যাংকিংয়ের চেয়ে উপশাখাগুলোর আমানত প্রবৃদ্ধি ছিল প্রায় ৪ গুণ বেশি। আর ঋণ বিতরণের প্রবৃদ্ধিও ছিল সার্বিক প্রবৃদ্ধির ৭ গুণ। তবে ব্যাংকগুলোতে ঋণ বিতরণে বড় ধরনের স্থবিরতা চললেও উপশাখার ক্ষেত্রে এ চিত্র একেবারেই ভিন্ন। এপ্রিল-জুন সময়ে ব্যাংকগুলোর সামগ্রিক ঋণ প্রবৃদ্ধি যেখানে ১ দশমিক ৩ শতাংশ, উপশাখার মাধ্যমে সে প্রবৃদ্ধি ছিল ৯ দশমিক ৮ শতাংশ।
উল্লেখ্য, দেশের ব্যাংকগুলোর উপশাখা ব্যাংকিং নিয়ে গত সপ্তাহে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। অপরদিকে, জনগণের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বাড়াতে ২০১৯ সালে দেশের ব্যাংকগুলোকে উপশাখা চালুর অনুমোদন দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে তারও এক বছর আগে কয়েকটি ব্যাংক ‘ব্যাংকিং বুথ’ চালু করে। ব্যাংকিং বুথ স্থাপনের এ মডেলই পরবর্তী সময়ে উপশাখা হিসেবে স্বীকৃতি পায়। ব্যাংকগুলো নির্দিষ্ট কোনো শাখার অধীনে তিন-চারজন কর্মী নিয়ে ছোট পরিসরে উপশাখা চালু করছে। চলতি বছরের জুন শেষে দেশের ৬২টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে ৪৮টিই উপশাখা চালু করেছে। এখন ব্যাংকগুলোর চালু করা উপশাখার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৮০০টিতে। এর মধ্যে ৪৯ শতাংশই গ্রামীণ এলাকায়।
তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন শেষে দেশের ব্যাংক খাতে মোট আমানতের স্থিতি ছিল ১৯ লাখ ৯৬ হাজার ৫৮৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৬৮ হাজার ৭১ কোটি টাকা সংগ্রহ হয়েছে উপশাখার মাধ্যমে, যেখানে আমানত হিসাবের সংখ্যা ছিল ৬৭ লাখ ৮১ হাজার ৮৭৪টি। একই সময়ে দেশের ব্যাংকগুলোর বিতরণকৃত মোট ঋণ স্থিতি ছিল ১৭ লাখ ৩৪ হাজার ১৭২ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১৭ হাজার ২৭৭ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ হয়েছে উপশাখার মাধ্যমে।