প্রতিনিধি 5 September 2025 , 4:33:19 প্রিন্ট সংস্করণ
ভেনেজুয়েলা ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে লিওনেল মেসির প্রসঙ্গে কেঁদে ফেলেছিলেন আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনি। একে তো জাতীয় দলে তাঁর সাবেক সতীর্থ, কোচ হওয়ার পর স্কালোনির সব সাফল্যের পুরোধা তো মেসিই।
সেই মেসি দেশের মাটিতে শেষ প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলবেন—এমন আবহে আবেগ দমিয়ে রাখাটা কষ্টকর ছিল স্কালোনির জন্য। আজ সকালে স্কালোনি সেই আবেগের ভেতর দিয়েই গেলেন। ডাগআউটে দাঁড়িয়ে মেসিকে খেলতে দেখলেন, আর্জেন্টিনার মাটিতে তাঁর শেষ প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ। মেসির জোড়া গোলে ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে ৩–০ গোলে জয়ের পর সংবাদ সম্মেলনে তাঁকে নিয়ে কথা বলেন স্কালোনি।
আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম ‘লা নাসিওন’ জানিয়েছে, ২০২৬ বিশ্বকাপের আগে মেসির জন্য দেশের মাটিতে একটি প্রীতি ম্যাচ আয়োজনের কথা ভাবছে আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এএফএ)। এ প্রসঙ্গে স্কালোনি বলেছেন, ‘লিও রোজারিওতে (জন্মস্থান) একটি ম্যাচ খেলতে পারলে ভালো লাগত। কিন্তু এ বিষয়ে আমি তেমন কিছু জানি না। আমরা কার বিপক্ষে খেলছি, এটা নিয়ে ভাবার চেয়ে সবাই মিলে একসঙ্গে হতে পারাকেই বেশি গুরুত্ব দিই।’
আগামী বুধবার বাংলাদেশ সময় সকালে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে নিজেদের শেষ ম্যাচে স্বাগতিক ইকুয়েডরের মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনা। স্কালোনি জানিয়েছেন এ ম্যাচে মেসি খেলবেন না, ‘মেসি (ইকুয়েডরে) যাবে না। (ভেনেজুয়েলা ম্যাচের) শেষ দিকে সে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল। (মাঠ থেকে) উঠে আসা উচিত ছিল। কিন্তু সেটা করেনি, কারণ এই ম্যাচে আবেগের জায়গা ছিল এবং পুরো ম্যাচে তাকে খেলানোর বিষয়ে আমরা আগেই সম্মত হয়েছি। সে ইকুয়েডরে যাচ্ছে না। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ পাওয়াটা তার প্রাপ্য।’
মেসিও ম্যাচ শেষে জানিয়েছেন স্কালোনির সঙ্গে কথা বলেই তিনি ইকুয়েডরের বিপক্ষে ম্যাচটি না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ‘লিওর (স্কালোনি) সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি আমাকে বিশ্রাম দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সবে চোট থেকে সেরে উঠেছি। এখন ভালো থাকলেও আমাকে সঙ্গে না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল যেন সামনের ম্যাচগুলোর জন্য প্রস্তুত হতে পারি, যেটা গুরুত্বপূর্ণ।’
এর ফলে কনমেবল অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ডটি এককভাবে আর মেসির হচ্ছে না। আজকের ম্যাচ দিয়ে মেসি এত দিন পর্যন্ত ম্যাচ খেলায় শীর্ষে থাকা ইভান উতার্দোর (৭২) রেকর্ড স্পর্শ করেছেন। শেষ ম্যাচ খেললেও উতার্দোকে ছাড়িয়ে যেতে পারতেন মেসি।
আজ শেষ বাঁশি বাজার পর মেসিকে ঘিরে আবেগে ভেসেছেন তাঁর সতীর্থরা। বেশির ভাগ সতীর্থই মেসিকে জড়িয়ে ধরেন। ম্যাচে মেসিকে দিয়ে গোল করানো প্রসঙ্গে আর্জেন্টিনা ফরোয়ার্ড হুলিয়ান আলভারেজ টিওয়াইসি স্পোর্টসকে বলেন, ‘লিওর সঙ্গে খেলতে পারা আমাদের জন্য সম্মানের। শট নেওয়ার কথা ভেবেছিলাম। কিন্তু তাকে (মেসি) আসতে দেখে পাসটা দিই।’
আর্জেন্টিনার দ্বিতীয় গোলটি করা লাওতারো মার্তিনেজ মেসিকে নিয়ে বলেছেন, ‘আবেগের রাত, স্মরণীয় রাত। লিও আমাদের কাছে যতখানি, সে জন্য রাতটা আমাদের মনে থাকবে। শুধু ফুটবলার হিসেবে তাকে নিয়ে বলছি না। একজন মানুষ, নেতৃত্বগুণ এবং প্রতিদিন তার কাছ থেকে যা শিখি, সেসবের ভিত্তিতে বলছি।’
জাতীয় দলে মেসির ‘দেহরক্ষী’খ্যাত মিডফিল্ডার রদ্রিগো দি পল আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম ‘ওলে’কে বলেছেন, ‘সে ২০ বছর ধরে খেলছে এবং শেষটা সামনেই। এটাই জীবন এবং সবচেয়ে পছন্দের কাজটাই সে ছেড়ে যাবে। যখন সে আর ফিরবে না, তার অর্থ হলো সে নিজের সর্বস্ব নিংড়ে দিয়েছে, সব জিতেছে এবং অনেক মানুষকে সুখী করেছে।’