প্রতিনিধি 22 October 2025 , 7:47:13 প্রিন্ট সংস্করণ

আবদুর রহমান খান: ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে, বিএনপি চলতি অক্টোবর অথবা আগামী নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রায় ২৫০টি আসনে একক প্রার্থী চূড়ান্ত করার পরিকল্পনা করছে। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে দলের মধ্যে সম্ভাব্য কোন্দল কমবে। এ ছাড়া মনোনীত প্রার্থীরা ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনি প্রচারণায় কাজ করতে পারবেন বলেও মনে করছে দলের শীর্ষ নেতারা।
তবে দলের তফশিল অনুযায়ী কে কোন আসনে প্রার্থী হবেন, তা এই মাসের মধ্যে সবুজ সংকেতের মাধ্যমে নির্ধারণ করা হবে। দলের শীর্ষ কয়েকজন নেতার সূত্রে জানা গেছে, একক প্রার্থী ঘোষণা করার আগে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে জনগণের গ্রহণযোগ্যতা, জনপ্রিয়তা ও পার্থক্য বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতা মোশাররফ হোসেন জানান, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ইতোমধ্যে প্রার্থীদের ফোন করে মাঠে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
বিশেষভাবে নজর দেয়া হচ্ছে, সম্ভাব্য প্রার্থীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার বিষয়টি। যেহেতু প্রতি আসনে ৪-৫ জন মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছেন। এর মধ্যে যাচাই-বাছাই করে ২-৩ জনকে বৈঠকে ডাকা হচ্ছে। বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব একক প্রার্থীকে বিজয়ী করে আনার নির্দেশনা দেন। সিলেট বিভাগের প্রার্থীদের ক্ষেত্রেও একই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এবং কিছু মিত্র দলের শীর্ষ নেতাদের আসনে বিএনপি সরাসরি সবুজ সংকেত দেবে না।

সম্প্রতি দলের তফশিল ও মনোনয়ন প্রক্রিয়া নিয়ে বৈঠক করেছেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সিলেট, মাগুরা, চট্টগ্রাম ও সুনামগঞ্জের মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতাদের সঙ্গে গুলশান কার্যালয়ে ধারাবাহিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে মনোনয়ন, নির্বাচনি প্রস্তুতি, প্রচারণা ও মাঠ পরিচালনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা বিভাগের সম্ভাব্য প্রার্থীদেরও পর্যায়ক্রমে ডাকা হবে।
জানা গেছে, ইতোমধ্যে বগুড়া জেলার ৫টি আসনে একক প্রার্থী চূড়ান্ত হয়েছে। বগুড়া-১: সাবেক সংসদ সদস্য কাজী রফিকুল ইসলাম। বগুড়া-২: জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও শিবগঞ্জ উপজেলা সভাপতি মীর শাহে আলম। বগুড়া-৩: আদমদীঘি উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল মুহিত তালুকদার। বগুড়া-৪: সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন। বগুড়া-৫: সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ। বগুড়া-৬ ও ৭ আসন জিয়া পরিবারের জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়েছে।
দলীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, একক প্রার্থীকে বিজয়ী করে আনার জন্য সব মনোনয়ন প্রত্যাশীকে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে কাজ করতে হবে। এছাড়া এলাকার জনগণের মধ্যে মনোযোগ বৃদ্ধি এবং ভোটারদের মন জয় করাও প্রার্থীদের দায়িত্ব। তারা আশা করছেন, একক প্রার্থী, তরুণ নেতৃত্বের অগ্রাধিকার এবং ঐক্যবদ্ধ প্রচারণা নির্বাচনে বিএনপির জন্য ইতিবাচক ফলাফল আনবে।
অপরদিকে, সিরাজগঞ্জ জেলার ৬টি আসনের মধ্যে ৫টির একক প্রার্থীকে মাঠে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া সাতক্ষীরা, নাটোর ও ঢাকার কয়েকটি আসনের জন্যও একই নির্দেশনা প্রযোজ্য। জানা গেছে, এইবার তরুণ প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। প্রায় সব আসনে তরুণরা সক্রিয়ভাবে মাঠে রয়েছেন। নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের উদাহরণ টেনে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় সহ-অর্থনৈতিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন একদিকে ক্লিন ইমেজের অধিকারী, অন্যদিকে কর্মীবান্ধব। এমন তরুণ প্রার্থীরা মনোনীত হলে ধানের শীষের বিজয় সহজে নিশ্চিত হবে।