প্রতিনিধি 18 October 2025 , 3:48:48 প্রিন্ট সংস্করণ

বরেণ্য লালনসংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন প্রয়াত হয়েছেন গত ১৩ সেপ্টেম্বর। তাকে উৎসর্গ করে যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘আন্তর্জাতিক লালন উৎসব ২০২৫’। ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’ স্লোগান নিয়ে ১৯ অক্টোবর রোববার স্থানীয় সময় বেলা ৩টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত চলবে এই উৎসব। অনুষ্ঠিত হবে নিউইয়র্কের কুইন্স প্যালেসে। উদ্বোধন করবেন বাউল শফি মণ্ডল।
এতে প্রধান অতিথি থাকবেন নিউইয়র্ক স্টেট সিনেটর জোসেফ পি অ্যাডাবো জুনিয়র। অনুষ্ঠানে থাকছে লালন শাহকে নিয়ে আলোচনা, সংগীত, নৃত্য ও কবিতা পাঠের আয়োজন। সংগীত পরিবেশন করবেন সংগীতশিল্পী রিজিয়া পারভীন, শাহনাজ বেলী, স্বপ্নীল সজীব, কালা মিয়া, শিমুল খান, রেশমি মির্জা, মেলাল শাহ, করিম হাওলাদার, শাহিন হোসেন প্রমুখ। নৃত্য পরিবেশন করবে মিথুন ড্যান্স অ্যাকাডেমি এবং ফিউশন ডান্স ট্রুপ ইউএসএ। উৎসব আয়োজন করছে লালন পরিষদ ইউএসএ। সহযোগিতায় বাংলাদেশ ক্লাব যুক্তরাষ্ট্র।
আয়োজকেরা জানিয়েছেন, লালনের গান বাঙালি জাতির অমূল্য সম্পদ। এই গান সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া যেমন এই উৎসবের উদ্দেশ্য, তেমনি এই উৎসবের মাধ্যমে লালনকে স্মরণ করা হবে, স্মরণ করা হবে সদ্য প্রয়াত লালন সম্রাজ্ঞী সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীনকে। এরই মধ্যে উৎসব নিয়ে প্রবাসীদের মাঝে ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকেরা।

বেলী বলেন, ‘বেশ কিছুদিন হলো আমি যুক্তরাষ্ট্রে এসেছি। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি রাজ্যে সংগীত পরিবেশন করেছি। এবারের আন্তর্জাতিক লালন উৎসব আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি উৎসব। উৎসবে আমি আমার ভীষণ শ্রদ্ধার, ভালোবাসার এবং বাংলাদেশের গর্ব সদ্য প্রয়াত ফরিদা পারভীন আপাকে উৎসর্গ করে গান গাইব। এরই মধ্যে শিল্পীরা সবাই প্র্যাকটিসে অংশ নিয়েছি। সার্বিক আয়োজন দেখে মনে হচ্ছে এবারের লালন উৎসব বেশ ভালো হবে।’
১৯৫৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর নাটোরে জন্ম নেওয়া ফরিদা বেড়ে ওঠেন কুষ্টিয়ায়। সাংস্কৃতিক আবহে বড় হওয়া ফরিদার গানে হাতেখড়ি পাঁচ বছর বয়সে। তরুণ বয়সে লালনের গান একরকম ‘উপেক্ষিতই’ ছিল তার কাছে। পরে লালনের গানকে করে নিয়েছিলেন আপন। লালনের গান গেয়ে ফরিদা কেবল নিজেই জনপ্রিয় হননি, এই সংগীতকে দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চেও পৌঁছে দিয়েছেন। তাঁর গাওয়া বেশ কয়েকটি আধুনিক ও দেশের গান জনপ্রিয় হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে আছে ‘তোমরা ভুলে গেছ মল্লিকা দির নাম’, ‘এই পদ্মা এই মেঘনা’। বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রের গানেও কণ্ঠ দিয়েছেন এই শিল্পী। সংগীতের সাধনায় নিজেকে নিয়োজিত রেখে ১৯৮৭ সালে পেয়েছেন একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ নানা সম্মাননা। ২০০৮ সালে জাপান সরকারের ‘ফুকুওয়াকা এশিয়ান কালচার’ পুরস্কার পান তিনি। সেরা প্লেব্যাক গায়িকা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন ১৯৯৩ সালে।