প্রতিনিধি 8 October 2025 , 7:16:30 প্রিন্ট সংস্করণ

মিয়ানমারে সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলাকালে এক প্যারাগ্লাইডার থেকে বোমা নিক্ষেপে অন্তত ২৪ জন নিহত ও ৪৭ জন আহত হয়েছেন।
সোমবার সন্ধ্যায় মধ্য মিয়ানমারের চাউং ইউ টাউনশিপে এ হামলা চালানো হয়।
সরকার-বিরোধী নির্বাসিত সরকারের এক মুখপাত্র বিবিসি বার্মিজকে জানান, প্রায় ১০০ জন মানুষ সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন। তখনই একটি মোটরচালিত প্যারাগ্লাইডার ভিড়ের ওপর দুটি বোমা ফেলে।
২০২১ সালে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটিতে গৃহযুদ্ধ চলছে। এতে এখন পর্যন্ত হাজারো মানুষ নিহত এবং লক্ষাধিক বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সেনাবাহিনী দেশের অর্ধেকেরও বেশি এলাকা হারালেও সাম্প্রতিক সময়ে তারা বিমান হামলা ও ভারী গোলাবর্ষণ চালিয়ে আবারও নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে।

সাগাইং অঞ্চল, যেখানে সোমবারের হামলা হয়েছে, তা গৃহযুদ্ধের অন্যতম কেন্দ্রস্থল। ওই অঞ্চলের বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করে পিপলস ডিফেন্স ফোর্স নামের স্বেচ্ছাসেবী মিলিশিয়া, যারা স্থানীয় প্রশাসনও পরিচালনা করে। স্থানীয় এক পিডিএফ কর্মকর্তা জানান, তারা আগেই সম্ভাব্য বিমান হামলার সতর্কবার্তা পেয়েছিলেন এবং দ্রুত বিক্ষোভ শেষ করার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু প্রত্যাশার চেয়ে দ্রুত প্যারামোটর এসে পৌঁছায় এবং মাত্র সাত মিনিটের মধ্যেই হামলাটি ঘটে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের পর লাশ শনাক্ত করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। এক নারী জানান, “শিশুদের দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছিল। আমরা এখনও দেহের অংশ সংগ্রহ করছি।”
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, মোটরচালিত প্যারাগ্লাইডার ব্যবহার করে বেসামরিক জনগণের ওপর হামলা চালানো সেনাবাহিনীর একটি ভয়াবহ নতুন কৌশল। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পক্ষে নতুন যুদ্ধবিমান বা হেলিকপ্টার কেনা কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই তারা এখন এসব প্যারামোটর ও উন্নত ড্রোন ব্যবহার করছে, যা মূলত চীন ও রাশিয়া সরবরাহ করছে।
অ্যামনেস্টির মিয়ানমার বিষয়ক গবেষক জো ফ্রিম্যান বলেন, ‘এই হামলাটি মিয়ানমারের বেসামরিক জনগণকে সুরক্ষার জন্য বিশ্বের প্রতি একটি ভয়াবহ সতর্কবার্তা।’
সোমবারের এই সমাবেশ ছিল সামরিক নিয়োগ আইন ও আসন্ন জাতীয় নির্বাচন বিরোধী এক শান্তিপূর্ণ মোমবাতি প্রজ্বালন কর্মসূচি। বিক্ষোভকারীরা এ সময় আং সান সু চিসহ সকল রাজনৈতিক বন্দির মুক্তির দাবিও জানান।