প্রতিনিধি 22 September 2025 , 9:22:44 প্রিন্ট সংস্করণ

রোববার ভোরে সাবরা এলাকায় একাধিক বাড়ি বোমা হামলায় ধ্বংস হয়। আগস্টের শেষ দিক থেকে এই এলাকায় ট্যাঙ্ক নিয়ে প্রবেশ করে ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছিল ইসরায়েল।
হামলার পর এখন পর্যন্ত অন্তত ১৭ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। তবে আরও অনেকের চাপা পড়ে থাকার আশঙ্কায় স্থানীয় মানুষ ও উদ্ধারকর্মীরা খালি হাতে মাটি খুঁড়ে উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছেন। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, ধ্বংসস্তূপের নিচে হয়তো ৫০ জন পর্যন্ত আটকা রয়েছেন।
আটকা পড়া স্বজনদের উদ্ধারে মরিয়া আবেদন জানিয়েছেন তারা। ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে এখনও মানুষের চিৎকার শোনা যাচ্ছে বলেও জানান তারা।
একজন স্বজন বলেন, “আমি সারা বিশ্বের কাছে আবেদন করছি— আমাদের সহায়তা করুন। আমাদের আত্মীয়রা জীবন্ত চাপা পড়েছে। আমরা তাদের আর্তনাদ শুনতে পাচ্ছি, কিন্তু পৌঁছাতে পারছি না।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ধ্বংসস্তূপে উদ্ধারকাজ চালাতে গেলেই ইসরায়েলি ড্রোন থেকে গুলি চালানো হচ্ছে। প্রতি পাঁচজন এগোলে চারজন নিহত হন, একজন বেঁচে ফেরেন।

সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, হতাহতদের ছোট একটি যানবাহনে করে দ্রুত সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। অন্য এক ভিডিওতে দেখা গেছে, এক মা বিলাপ করছেন—“আমার সব সন্তানকে হারালাম।”
এদিকে রোববার গাজা সিটির পশ্চিমাঞ্চলীয় শাতি শরণার্থী শিবির ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় তাল আল-হাওয়া এলাকায়ও ভয়াবহ বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। নাসর জেলার লাভাল টাওয়ার ও পাশের একটি বাড়িতেও বোমা বর্ষণের খবর পাওয়া গেছে।
মধ্য গাজার বুরেইজ শরণার্থী শিবিরে আরও একটি বিমান হামলায় সাতজন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে চারজন শিশু। আল জাজিরাকে এক জরুরি সূত্র জানিয়েছে, এ হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল জাতিসংঘের প্যালেস্টাইন শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার (ইউএনআরডব্লিউএ) একটি ক্লিনিকের পাশের এলাকা।
ওয়াফা বার্তা সংস্থার উদ্ধৃত চিকিৎসা সূত্র জানায়, শুধু রোববার ভোর থেকে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৬৮ জন নিহত হয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এ পর্যন্ত অন্তত ৬৫ হাজার ২৮৩ জন নিহত এবং ১ লাখ ৬৬ হাজার ৫৭৫ জন আহত হয়েছেন।
এছাড়া গত একদিনেই ক্ষুধা ও দুর্ভিক্ষে আরও চারজন মারা গেছেন। এতে ক্ষুধাজনিত মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৪৪০ জনে, যাদের মধ্যে ১৪৭ জনই শিশু।