প্রতিনিধি 14 September 2025 , 7:52:38 প্রিন্ট সংস্করণ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হলে আঞ্চলিক নিরাপত্তা হুমকিতে পড়তে পারে। রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠান যেন না হতে পারে, যেন একটি অনিশ্চিত পরিবেশ সৃষ্টি হয়, ফ্যাসিবাদী শক্তি সেই চেষ্টা করছে। ফ্যাসিবাদী শক্তি সুযোগ পেলে, আস্কারা পেলে জাতীয় জীবনের জন্য, এমনকি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হবে। আমি বলছি, এটি রিজিওনাল সিকিউরিটির জন্য থ্রেড হতে পারে’। প্রতিবেশী শক্তিধর দেশগুলোর প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘এখানে দুটি রিজিওনাল শক্তি। আমরা বাংলাদেশকে সেখানে নিতে চাই না। নির্ধারিত টাইম লাইনে নির্বাচন হতেই হবে।’

আওয়ামী লীগ আমলে বিএনপি সবচেয়ে বেশি অবিচারের শিকার হয়েছে উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আমরা গুম-হত্যা-নির্যাতনের শিকার হয়েছি। বিচার চলবে, এটা আমাদের কমিটমেন্ট, জাতির কমিটমেন্ট। কিন্তু নির্বাচনকে কন্ডিশনাল করা যাবে না। এ ছাড়া সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন কোনোভাবেই একটি অন্যটি ওপর সম্পর্কিত নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, সংস্কার সংস্কারের মতো চলবে, এটি কনটিনিউ প্রসেস। বিচারেও টাইম লিমিট করা যায় না, তাতে অবিচার হবে। সেটা (বিচার) চলবে, যে সরকারই আসুক। কিন্তু নির্বাচনকে কন্ডিশনাল করা যাবে না।
প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘স্পেশাল কনস্টিটিউশনাল অর্ডারে আপনি (প্রধান উপদেষ্টা) করলেন। আমরা কেউ কিছু বললাম না। ঐকমত্য কমিশন থেকে আমরা আপনাকে দায়িত্ব দিলাম, সনদ বাস্তবায়নের ব্যাপারে আপনি সিদ্ধান্ত দেন। তারপর আপনি করলেন। কিন্তু যেকোনো একজন নাগরিক যদি এটি নিয়ে চ্যালেঞ্জ করে কোথাও যায়, সেটি আপনার গ্লোবাল রিপোটেশন নিয়ে প্রশ্ন তুলবে’।
সংবিধান সংস্কারের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এখানে ১৯টি মৌলিক বিষয় চিহ্নিত করা হয়েছে। বাস্তবে মৌলিক বিষয় আরও অনেক আছে। আমরা ৮২৬টি ছোট-বড় সংস্কার প্রস্তাব পেয়েছি। এগুলো দলে আলোচনা করে লিখিত মতামত দিয়েছি। মাত্র ৫১টি প্রস্তাবে আমরা দ্বিমত করেছি, ১১৫টি প্রস্তাবে আমাদের মতামতসহ ভিন্নমত দিয়ে গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছি। এ বিষয়ে চূড়ান্ত ঐকমত্য হয়েছে প্রায়। মৌলিকগুলো নিয়ে ৮৪৫টি সংস্কার প্রস্তাব হয়’।
জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আইনি ভিত্তি নিয়ে আলোচনা হলে আমরা তাতে অংশ নেবো। সেই আলোচনা শুরু হয়েছে। তার আগে কমিশন বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়েছে। সেখান থেকে অঙ্গীকারনামার যে ড্রাফট দেয়া হয়েছে, তাতে আমরা লিখিত মতামত দিয়েছি। কোনো আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না, এটি তেমন কোনো দলিল হতে পারে না। সংবিধানের ওপর সনদকে স্থান দেয়া গ্রহণযোগ্য নয়। এর বাইরেও অনেক পন্থা থাকতে পারে, যেন আমরা এটির বৈধতা ও আইনি ভিত্তি দিতে পারি। আপিল বিভাগেরও পরামর্শ নিতে পারি।