প্রতিনিধি 11 October 2025 , 5:59:40 প্রিন্ট সংস্করণ

এই সময়ের অস্থির আবহাওয়া এডিস মশার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করছে। থেমে থেমে বৃষ্টিতে রাস্তাঘাট, বাসাবাড়ি ও আশপাশে বিভিন্ন স্থানে জমে থাকা পানিতে লার্ভা ছড়িয়ে এডিস মশার বিস্তার ঘটছে। ফলে হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর ভিড় বাড়ছে। মৃত্যুও ঘটছে প্রতিদিন। এবার চলতি মৌসুমে সবচেয়ে বেশি রোগী ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে সেপ্টেম্বরে। অক্টোবরেও ডেঙ্গুর ভয়াবহতা অব্যাহত আছে। মাসের প্রথম ১০ দিনে প্রায় ৬ হাজার মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ সময়ে মারা গেছেন ২৬ জন।
অপরদিকে, গত বছর সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছিল অক্টোবর থেকে নভেম্বরের মধ্যে। সে সময় নভেম্বরই সবচেয়ে বেশি রোগী ধরা পড়ে। চলতি মৌসুমে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৫৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এর মধ্যে অন্তত ২২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। বৃষ্টি এভাবে চলতে থাকলে অক্টোবরেই সেপ্টেম্বরের চেয়ে বেশি রোগী ও মৃত্যু হতে পারে। সে সঙ্গে ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুর বিস্তার থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্যবিদরা বলেছেন, ‘রোগী বাড়লে মৃত্যুও বাড়ে। চলতি বছরে ডেঙ্গু বাড়তে শুরু করে মে মাস থেকে। অক্টোবর ও নভেম্বর মাসেও উচ্চঝুঁকি থেকে যাচ্ছে। তাই নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে বাসাবাড়ি পরিষ্কার রাখতে হবে। ৩ দিনের বেশি জমে থাকা পানি ফেলে দিতে হবে। মশারি ব্যবহার করতে হবে। জ্বর অনুভব করলে অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে’।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, জুন মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল ৫ হাজার ৯৫১ জন, মৃত্যু ১৯ জনের। জুলাইয়ে ভর্তি ১০ হাজার ৬৮৪ জন, মৃত্যু ৪১ জনের। আগস্টে ভর্তি ১০ হাজার ৪৯৬, মৃত্যু ৩৯ জনের। সেপ্টেম্বরে ভর্তি সর্বোচ্চ ১৫ হাজার ৮৬৬, মৃত্যু ৭৬ জনের। অক্টোবরের প্রথম ১০ দিনে ভর্তি ৫ হাজার ৮৫১ জন, মৃত্যু ২৬ জনের।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে শুক্রবার ডেঙ্গুতে মৃত্যুহীন একটি দিন পার হয়েছে; কিন্তু এ দিন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৩০৮ জন। এ পর্যন্ত চলতি বছর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৩ হাজার ১৯৩ জন। মৃত্যু হয়েছে ২২৪ জনের। ১০ অক্টোবর ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে ঢাকা মহানগরের ৮৭ জন, বরিশালের (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১১৫, চট্টগ্রামের ৮৫, ময়মনসিংহের ২১ জন। ২০২৫ সালে ডেঙ্গুতে মৃত ২২৪ জনের মধ্যে ১১৭ জন পুরুষ ও ১০৭ জন নারী। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া মোট রোগীদের মধ্যে ৬১ দশমিক ১ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৮ দশমিক ৯ শতাংশ নারী।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে আক্রান্ত হয়েছিল ১ লাখ ১ হাজার ৩৭৪ জন, মৃত্যু ১৬৪ জনের। ২০২১ সালে ২৮ হাজার ৪২৯ জন আক্রান্ত, মৃত্যু ১০৫ জনের। ২০২২ সালে আক্রান্ত ৬২ হাজার ৩৮২, মৃত্যু ২৮১ জনের। ২০২৩ সালে ভয়াবহ রূপ নেয় ডেঙ্গু, আক্রান্ত ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯, মৃত্যু ১ হাজার ৭০৫ জন। ২০২৪ সালে ১ লাখ ১ হাজার ২১৪ জন আক্রান্ত, মৃত্যু ৫৭৫ জনের। ২০২৫ সালে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত ৫৩ হাজার ১৯৩, মৃত্যু ২২৪ জনের।