যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীদের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, আগামীর বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবেন মূলত রাজনীতিবিদরাই।
ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল আয়োজিত ‘অ্যাডভান্সিং রিফর্ম, রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড গ্রোথ’ শীর্ষক বৈঠকে প্রবাসী ও মার্কিন বিনিয়োগকারীদের এ কথা বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা তার সফরসঙ্গী নেতাদেরও পরিচয় করিয়ে দেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও হুমায়ূন কবীর, জামায়াত নেতা সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ও ড. নাকিবুর রহমান এবং এনসিপির দুই নেতা আখতার হোসেন ও ড. তাসনিম জারা।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, বৈঠকে মার্কিন বড় বড় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে এবং ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত ও তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে বহুজাতিক কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জির বাংলাদেশ প্রধান পিটার হাস, দক্ষিণ এশীয় বিষয়ক সাবেক মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ইউএস ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ফিনান্স করপোরেশনের ডেপুটি সিইও নিশা দেশাই বিসওয়ালসহ ব্যবসায়ী নেতারা।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, নির্বাচনের পর গণতান্ত্রিক সরকার দেশ পরিচালনা করবে। সেসময় যাতে মার্কিন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে রাজনৈতিক নেতাদের পরিচয় এবং সুসম্পর্ক থাকে, সেই উদ্দেশ্যে প্রধান উপদেষ্টা সকলের সঙ্গে পরিচয় করিয়েছেন।
এর আগে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে টেকসই উন্নয়ন নিয়ে প্রথম দ্বিবার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেন প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, বৈশ্বিক উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে ৪ ট্রিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘাটতি মেটাতে হবে। জলবায়ুর ক্ষতিকারক প্রভাব ও বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেও বাংলাদেশ ১৩ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে উল্লেখ করে বিশ্বনেতাদের পাশে থাকার আহ্বান জানান ড. ইউনূস।
পরবর্তীতে প্রধান উপদেষ্টা প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের ওয়ার্কিং সেশনে অংশ নেন। এসময় সরকারের সফরসঙ্গী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নেতা ডাক্তার তাসনিম জারা বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাত নিয়ে বক্তব্য রাখেন।
প্রতিটি বৈঠকেই দেশের চলমান সংস্কার, বিচার ও জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বাংলাদেশের সরকার প্রধান হিসেবে নয়, বরং বিশ্ব নেতার ভূমিকাতেও জাতিসংঘের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকগুলোতে গুরুত্ব পাচ্ছেন। এসব বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ, সংঘাত বন্ধ এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলা করে বাংলাদেশ যে এগিয়ে যাচ্ছে, সেটিও তিনি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরেছেন।