প্রতিনিধি 23 October 2025 , 6:55:13 প্রিন্ট সংস্করণ

বাংলাদেশ শ্রম আইন সংশোধন (অ্যামেন্ডমেন্ট) অধ্যাদেশ ও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-২০২৫ (আরপিও বা রিপ্রেজেন্টেশন অফ পিপলস অর্ডার অর্ডিন্যান্স) আইন দুটি পাসের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এর চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়।
এদিন বিকেলে রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল এসব তথ্য জানান। ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
অপরদিকে, এ দুটি আইন ছাড়াও আরও ৩টি আইনের নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়। সেগুলো হলো-সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় আইন, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ও জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর আইন। এ সম্পর্কে আরও আলোচনা শেষে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উপদেষ্টা পরিষদে উত্থাপন করা হবে বলে জানান আইন উপদেষ্টা।
আসিফ নজরুল বলেন, আজকে আমাদের খুবই গুরুত্বপূর্ণ দুইটা আইন পাস হয়েছে। আর তিনটা আইনের নীতিগত অনুমোদন হয়েছে। যে আইনগুলো পাস হয়েছে চূড়ান্তভাবে, একটা হচ্ছে-বাংলাদেশ শ্রম আইন (সংশোধন) অধ্যাদেশ (Bangladesh Labor Law Amendment Ordinance)। আরেকটা হচ্ছে আরপিও (জনপ্রতিনিধিত্ব আদেশ/Representation of the People Order), এটা নির্বাচন-সংক্রান্ত। এই দুইটা আইন পাস হয়েছে। আর তিনটা আইন নীতিগতভাবে অনুমোদিত হয়েছে।

আইন উপদেষ্টা বলেছেন, চূড়ান্তভাবে যে আইনটা অনুমোদন হয়েছে, এটা খুবই যুগান্তকারী একটা আইন। আমি বলব- বাংলাদেশ শ্রম আইন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, এখানে আমাদের শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষার জন্য, তাদের কল্যাণের জন্য অনেকগুলো পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ৯০টি সেকশনে সংশোধনী আনা হয়েছে। ৩টা শিডিউলে ৯০টি সেকশনে সংশোধনী আনা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, শ্রম আইন এখন থেকে নন-প্রফিট যে অর্গানাইজেশন আছে সেটার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। শ্রমিকের ডেফিনেশনকে বিস্তৃত করা হয়েছে। গৃহপরিচারক যারা আছেন, নাবিক যারা আছেন, তারাও এখন শ্রমিক হিসেবে শ্রম আইনের সুরক্ষা পাবেন। ব্ল্যাকলিস্টিং একটা প্রথা ছিল যে, শ্রমিক যাদের বিরুদ্ধে মালিকদের অভিযোগ থাকতো, তারা ব্ল্যাকলিস্ট করতো, তারা অন্য কোথাও চাকরি পেত না। ব্ল্যাকলিস্টিংকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এ ছাড়াও যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার বিধান করা হয়েছে। প্রসূতি যারা থাকবেন, তাদের কল্যাণমূলক সুবিধা অনেক বাড়ানো হয়েছে। ট্রেড ইউনিয়ন গঠন এবং রেজিস্ট্রেশন অনেক সহজ করা হয়েছে। শ্রমিকদের মধ্যে বৈষম্য (ডিসক্রিমিনেশন), আপনারা জানেন, একই কাজ ছেলে এবং মেয়েরা করলে মেয়েদেরকে কম বেতন দেয়া হতো। সেই বৈষম্যকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। দুর্ঘটনা ক্ষতিপূরণ তহবিল, দুর্ঘটনা যদি হয় কর্মস্থলে, সেটার জন্য একটা ফান্ড গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে।