প্রতিনিধি 16 October 2025 , 11:30:49 প্রিন্ট সংস্করণ

চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (সিইপিজেড) এলাকার দুটি কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড আট ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনো নিয়ন্ত্রণ আসেনি। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে অ্যাডামস ক্যাপস অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড ও জিহং মেডিকেল কোম্পানির গুদামে আগুন লাগে। রাত ১০টা পর্যন্ত চেষ্টার পরও আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
ফায়ার সার্ভিসের ২৩টি ইউনিটের সঙ্গে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর সদস্যরাও আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। আগুনের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় উদ্ধার অভিযানে সহায়তা করতে ২ প্লাটুন বিজিবি সদস্য ঘটনাস্থলে যোগ দিয়েছে। এছাড়াও আগুন নিয়ন্ত্রণে যুক্ত করা হয়েছে রোবট।
ফায়ার সার্ভিস চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক আনোয়ার হোসেন বলেন, আগুন নেভাতে একটি রোবট ব্যবহার করা হচ্ছে। এটিতে লাগানো পাইপ দিয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পানি ছেটানো হচ্ছে।
এদিকে আগুন লাগা ভবনের ৮ তলার ছাদ ধসে পড়েছে। ভেতরে থেমে থেমে ছোট ছোট বিস্ফোরণ ঘটছে, যা আগুন নিয়ন্ত্রণে বাধা সৃষ্টি করছে। প্রচণ্ড তাপের কারণে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ভবনের কাছাকাছি যেতে পারছেন না এবং দূর থেকে পানি ছিটিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন।

আগুনের তাপে পাশের একটি তিনতলা ভবনেও আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। এ ছাড়া আশপাশের বেশ কয়েকটি কারখানার ভবন অতিরিক্ত গরম হয়ে গেছে। আগুন ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে এসব কারখানার কর্তৃপক্ষ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পানি ছিটিয়ে ভবন শীতল রাখার চেষ্টা করছে।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক জসিম উদ্দিন বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা ১০ মিনিটে আগুনের খবর পাই। ১৯টি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। এখনও আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগুন লাগা প্রতিষ্ঠানগুলোতে তোয়ালে ও হাসপাতালে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি তৈরি করা হতো। প্রচুর দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আপাতত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
ফায়ার সার্ভিসের বিভাগীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানিয়েছে, বন্দর, আগ্রাবাদ, ইপিজেড, কালুরঘাট ও চন্দনপুরা স্টেশনের মোট ২৩টি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করছে।
সিইপিজেড সূত্রে জানা গেছে, অ্যাডামস ক্যাপস অ্যান্ড টেক্সটাইল তোয়ালে ও ক্যাপ তৈরি করে, আর জিহং মেডিকেল কোম্পানি সার্জিকেল গাউন উৎপাদন করে। সাততলা ভবনের সর্বোচ্চ তলায় অবস্থিত গুদাম থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয় বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
ভবনটিতে প্রায় ৭০০ শ্রমিক কাজ করতেন। তবে দুর্ঘটনার সময় সবাইকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. আব্দুস সোবহান। তিনি বলেন, আগুন লেগেছে ভবনের ৭ম তলায়, যা মূলত গুদাম হিসেবে ব্যবহৃত হতো। শ্রমিকরা সাধারণত দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় কাজ করতেন। ভেতরে এখন কোনো শ্রমিক নেই, সবাইকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।