প্রতিনিধি 11 October 2025 , 6:53:08 প্রিন্ট সংস্করণ

ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে বন্দিদশা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। তিনি বলেছেন, তাদের ওপর মানসিক অত্যাচার বেশি করা হয়েছে। এ ছাড়াও জেলের ভেতরে আতঙ্ক তৈরির চেষ্টা এবং তাদের একজন সহযাত্রীকে গুলি করে মারার হুমকিও দেয়া হয়েছে।
শনিবার (১১ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর দৃক পাঠ ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন অভিজ্ঞতার কথা জানান। ইসরায়েলের আটক দশা থেকে মুক্ত হয়ে ভোরে দেশে ফেরেন তিনি।
শহিদুল জানান, ‘আটক করে জাহাজ থেকে নামানোর পর তাদের ওপর অনেক ধরনের নির্যাতন করা হয়েছে। তবে এর মধ্যে মানসিক নির্যাতন বেশি করা হয়েছে। তাদের হাত পেছনে নিয়ে বেঁধে যেখানে হাঁটুমুড়ে বসানো হয়েছিল, সেখানে ইসরায়েলি বাহিনী আগে থেকে মূত্রত্যাগ করেছিল। এরপর তার বাংলাদেশি পাসপোর্ট ইসরায়েলি বাহিনী ফেলে দেয়। তিনি যতবার সেটি তুলেছেন ততবার তার ওপর চড়াও হয়েছে’।
সে সময় নিজেদের মধ্যে কথা বলায় অন্য দুজন সহযাত্রীকে মেশিনগানের ব্যারেল দিয়ে আঘাত করা হয়েছে বলেও জানান। মরুভূমির মধ্যে ইসরায়েলের সবচেয়ে গোপনীয় কারাগারে তাদের রাখা হয়। সেখানে অন্য জাহাজ থেকে আটক হওয়া আরেকজন সহযাত্রী তাকে জানান, ইসরায়েলি বাহিনী ওই ব্যক্তিকে আটক করার পর বলেছিল ‘তুমি হামাসের এজেন্ট, ভেতরে নিয়ে তোমাকে গুলি করা হবে।’

আলোকচিত্রী আরও বলেন, ‘কারাগারে তারা অনশন করেছিলেন। কোনো খাবার খাননি। তবে শারীরিক দুর্বলতার কারণে কয়েকজন খাবার খেয়েছেন। আড়াই দিনে তাদের মাত্র এক প্লেট খাবার দেয়া হয়। তাদের যেখানে শুতে দেয়া হয়েছিল, তা ছিল লোহার, শৌচাগারগুলোর অবস্থাও ছিল শোচনীয়’।
এর আগে বুধবার (৮ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় সকাল সোয়া ১০টার দিকে তার ফেসবুকে পোস্ট করা একটি ভিডিও বার্তায় তিনি দাবি করেছেন, ইসরায়েলি বাহিনী আন্তর্জাতিক জলসীমায় তাদের গাজাগামী জাহাজ আটকে দিয়েছে এবং তাকে অপহরণ করেছে।
ভিডিওতে শহীদুল আলম বলেন, “আমি শহীদুল আলম, বাংলাদেশের একজন আলোকচিত্রী এবং লেখক। আপনি যদি এই ভিডিওটি দেখেন, তাহলে দয়া করে জেনে রাখুন যে আমাদের সমুদ্রে আটকে রাখা হয়েছে এবং আমাকে ইসরায়েলের দখলদার বাহিনী অপহরণ করেছে। এরাই সেই একই বাহিনী, যারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য পশ্চিমা শক্তির সমর্থিত এবং সহায়তাপ্রাপ্ত, যারা গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে। আমি আমার সকল সহকর্মী এবং বন্ধুদের ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”
উল্লেখ্য, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (FFC) এবং থাউজেন্ড ম্যাডেলাইনস টু গাজা (TMTG) উদ্যোগের একটি জাহাজ MV Conscience-এ ছিলেন – সাংবাদিক ও চিকিৎসা কর্মীদের গাজায় নিয়ে যাওয়ার একটি আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা। এই অভিযানের লক্ষ্য ছিল গাজায় ইসরায়েলের অবৈধ অবরোধকে চ্যালেঞ্জ করা এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতার দাবি করা।