প্রতিনিধি 11 September 2025 , 1:33:49 প্রিন্ট সংস্করণ
ক্রিকেটে বাংলাদেশের লজ্জাজনক হারের তালিকা করতে বসলে হংকংয়ের বিপক্ষে হারটি ওপরের দিকেই থাকবে। ২০১৪ সালে দেশের মাটিতে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে হংকংয়ের কাছে ২ উইকেটে হেরেছিল বাংলাদেশ। সেই ম্যাচের কেউই অবশ্য আজ আর টাইগারদের টি-টোয়েন্টি দলে নেই। এই বাংলাদেশ এক নতুন দল যারা এশিয়া কাপ খেলতে গেছে টানা তিন সিরিজ জিতে।
এশিয়া কাপ দুইদিন আগে মাঠে গড়ালেও বাংলাদেশের মিশন শুরু হচ্ছে আজ (১১ সেপ্টেম্বর)। আবু ধাবির শেখ জায়েদ আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ হংকং। আইসিসির এই সহযোগী দলের বিপক্ষে বিশ্বকাপের মঞ্চে দ্বিতীয়বারের মতো খেলতে যাচ্ছে টাইগাররা। পুঁচকে হংকংয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের নির্ভার থাকার কথা হলেও ইতিহাস সেই সুযোগ দিচ্ছে না। এই সহযোগী সদস্যের বিপক্ষে একমাত্র ম্যাচটিতে হারের কলঙ্ক বয়ে বেড়াচ্ছে টাইগাররা।
এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচটা তাই বাংলাদেশের জন্য প্রতিশোধের মিশন। যে ম্যাচের আগে টাইগাররা ফুরফুরে থাকার কথা। লিটন দাসের দল যে আগের তিন সিরিজে হারিয়েছে শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান আর নেদারল্যান্ডসকে। পাকিস্তান আর নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে জয় নিজেদের মাটিতে হলেও শ্রীলঙ্কাকে তাদের মাটিতেই প্রথমবার হারের স্বাদ উপহার দিয়েছে টাইগার বাহিনী।
প্রায় এক যুগ আগের ম্যাচটার কোনো খেলোয়াড়ই এই বাংলাদেশের স্কোয়াডে নেই। সেই ম্যাচে খেলা পঞ্চপাণ্ডবরা বাংলাদেশের ক্রিকেটে এখন অতীত। সেই জায়গা নিয়েছেন লিটন দাস, মোস্তাফিজুর রহমানরা। দলে এসেছেন তানজিদ হোসেন তামিম, পারভেজ হোসেন ইমনদের মতো তরুণরা। এশিয়া কাপে বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচের একাদশে তেমন একটা চমক থাকার সম্ভাবনা নেই। সাম্প্রতিক সময়ে সাফল্য এনে দেয়া দলের ওপরই ভরাসা রাখবে টিম ম্যানেজমেন্ট।
ওপেনিংয়ে টাইগাররা যে তানজিদ হোসেন তামিম আর পারভেজ হোসেন ইমনের জুটির ওপরই ভরসা রাখবে তা নিশ্চিতভাবে বলা যায়। চলতি বছর এই দুই ওপেনার পাল্লা দিয়ে ছক্কা মেরেছেন। তানজিদের ছক্কা ২৩টি, ইমন মেরেছেন ২২টি।
বাজে সময় পেছনে ফেলে ছন্দে ফিরেছেন অধিনায়ক লিটনও। তিনে ব্যাট করবেন তিনিই। চলতি বছর ১৫ ম্যাচে ৩২.০৭ গড়ে ৪১৭ রান করে লিটনই দলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। ১৩৫.৩৮ স্ট্রাইক রেটে এই রান করার পথে হাঁকিয়েছেন ১৯টি ছক্কা।
চারে ব্যাট করা নিয়ে প্রতিযোগিতার মুখে পড়তে হচ্ছে তাওহীদ হৃদয়কে। সময়টা ভালো না গেলেও এই ম্যাচে শেষ পর্যন্ত সাইফ হাসানকে পেছনে ফেলে হৃদয়েরই খেলার সম্ভাবনা বেশি।
হৃদয়ের পর আছেন জাকের আলী অনিক ও শামীম হোসেন পাটোয়ারী। এদের মধ্যে জাকেরের জায়গা নিশ্চিত। খেলার সম্ভাবনা প্রবল শামীমেরও। ঝড়ো ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বাড়তি বোলিং অপশন ও দুর্দান্ত ফিল্ডিং শামীমের শক্তির জায়গা।
সাতে নামার কথা শেখ মেহেদী হাসানের। দলের প্রধান স্পিনার তিনিই। তবে সাতে ঝড়ো ব্যাটিংয়ের চাহিদা কতটুকু মেটাতে পারবেন তিনি, তা নিয়ে শঙ্কা আছে। ৪৩ ইনিংসে ব্যাট করার পরও মেহেদীর স্ট্রাইক রেট মাত্র ১০০.২৫।
২ স্পিনার ও ৩ পেসার নিয়ে দল সাজাবে বাংলাদেশ। অপর স্পিনার হিসেবে রিশাদ হোসেনই ম্যানেজমেন্টের প্রথম পছন্দ। লেগ স্পিনের পাশাপাশি তার ব্যাটিংও দলের গভীরতা বাড়াতে পারে। আর পেসার হিসেবে মোস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন আহমেদের জায়গা নিশ্চিত। তৃতীয় পেসার হওয়ার লড়াইয়ে আছেন শরীফুল ইসলাম, তানজিম হাসান সাকিব ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। এদের মধ্যে শরিফুল স্পেশালিস্ট বোলার হলেও সাকিব ও সাইফ ব্যাটিংও পারেন। তবে বোলিং দক্ষতায় সাইফ আবার সাকিবের চেয়ে পিছিয়ে। তাই শেষ পর্যন্ত একাদশে জায়গা পেতে পারেন সাকিবই।
বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ: তানজিদ হোসেন তামিম, পারভেজ হোসেন ইমন, লিটন দাস (অধিনায়ক), তাওহীদ হৃদয়, জাকের আলী, শামীম হোসেন, শেখ মেহেদী, রিশাদ হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান, তানজিম হাসান সাকিব ও তাসকিন আহমেদ।