প্রতিনিধি 2 September 2025 , 7:08:26 প্রিন্ট সংস্করণ
ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। পাহাড়ি অঞ্চলে লাগাতার বৃষ্টিপাত ও প্রবল স্রোতের কারণে সুতলজ, বিয়াস ও রাভি নদী উপচে পড়েছে। টানা এক মাস ধরে চলা এই বন্যায় এখন পর্যন্ত ২৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অন্তত আড়াই লাখ মানুষ।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২৩ জেলার মধ্যে ১২টি জেলার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছেন। সবচেয়ে বিপর্যস্ত জেলা পাঠানকোট—এখানেই ছয়জন মারা গেছেন এবং তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন। অমৃতসর, বরনালা, লুধিয়ানা ও হোশিয়ারপুরসহ একাধিক জেলায় আরও প্রাণহানি ঘটেছে।
বন্যার কবলে ১০০০টিরও বেশি গ্রাম তলিয়ে গেছে। প্রশাসনের হিসাবে, শুধু অমৃতসরেই প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ফেরোজপুরে প্রায় ২৪ হাজার, ফাজিলকায় ২১ হাজারের বেশি, পাঠানকোটে ১৫ হাজারেরও বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়েছেন।
এখন পর্যন্ত প্রায় ১৫ হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া হয়েছে। গুরদাসপুর থেকে সর্বাধিক উদ্ধারকাজ হয়েছে। তবে ত্রাণকাজের গতি এখনো পর্যাপ্ত নয় বলে স্থানীয় মানুষ অভিযোগ করছেন। পানির তোড়ে রাস্তাঘাট ভেসে যাওয়ায় দুর্গত এলাকায় ত্রাণ পৌঁছাতে হিমশিম খাচ্ছে প্রশাসন।
কৃষি খাতেও ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছে। প্রায় ৯৬ হাজার হেক্টর জমির ফসল পানির নিচে। ধান ও ভুট্টার জমি বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাশাপাশি বিপুলসংখ্যক গবাদিপশু মারা গেছে।
সেনা, এনডিআরএফ ও রাজ্য পুলিশের সদস্যরা সার্বক্ষণিক উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন। ২০টি বিশেষ দল দুর্গত এলাকায় কাজ করছে। রাজ্য সরকার বলছে, ক্ষতির পূর্ণ হিসাব কেবল পানি কমার পরই পাওয়া যাবে।
বিশ্লেষকদের মতে, এবারের বন্যা জলবায়ু পরিবর্তন ও নদী অববাহিকার অপরিকল্পিত উন্নয়নের ফলাফল। এমন পরিস্থিতি দীর্ঘমেয়াদে মোকাবিলা করতে হলে নতুন করে পরিকল্পনা নিতে হবে।